সময় বদলেছে, দূর্গাপুজোতেও তার প্রভাব পড়েছে । শুধুই পুজো নয়,বিনোদনের মাত্রাও যোগ হয়েছে উৎসবে । আগে পুজো ছিল ৪ দিনের উৎসব । বর্তমানে মহাপুজোর কর্ম ব্যস্ততা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় । অনেক পুজোই থিম কেন্দ্রিক । বহু আগেই শুরু হয় এই থিমের পরিকল্পনা ।
পশ্চিমবঙ্গের পুজো প্যাণ্ডেলগুলি থিম তৈরি করার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা এবং শিল্পের দিক থেকে সেরাটি নির্বাচন করে । কলকাতার থিম ভিত্তিক বিখ্যাত প্যান্ডেল গুলোর মধ্যে অন্যতম ইয়ং বয়েজ ক্লাব । প্রতি বছরের মত এবারও প্রাসঙ্গিক সামাজিক সমস্যাগুলোকে থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে । এই বছর তাদের থিম “দেবী দূ্গা- মহাবিশ্বের শক্তি ।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে, দেবী দুর্গাকে সবচেয়ে শক্তিশালী পবিত্র মূর্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। দুর্গার পরাক্রম তাঁর ১০টি হাতে বিভিন্ন অস্ত্রকে সূচিত করে, যা বিভিন্ন শক্তির প্রতীক হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে। দেবী দুর্গার রূপ ভক্তদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। দেবী দুর্গা অসুরদের প্রতি হিংস্র এবং একই সাথে তার ভক্তদের জন্য কল্যাণময়। দেবীর দশটি হাতের প্রতীক এই অর্থ বহন করে যে তিনি তাঁর ভক্তদের সমস্ত দিক থেকে রক্ষা করেন। তাঁর হাতে থাকা এই ১০টি গ্লোবের প্রতীক বোঝায় কীভাবে দেবী এই ১০টি গ্লোবকে সমস্ত অসুবিধা এবং সমস্যা থেকে রক্ষা করছেন।
মিডিয়ার সাথে কথা বলার সময় প্রধান সংগঠক মিঃ রাকেশ সিং বলেন, “এই বছর, ইয়ং বয়েজ ক্লাব দেবী দুর্গার ঐশ্বরিক শক্তির প্রতিলিপি তৈরি করছে যেখানে ৩২ ফুটের মা দুর্গা স্থাপন করা হবে, যা বিশ্ব শক্তির উৎসের প্রতীক হিসেবে প্রদর্শিত হবে । বিশ্বশক্তির সাথে দেবীর সম্পর্ক বোঝাতে মূর্তিটির দশ হাতে দশটি গ্লোব থাকবে, যা পৃথিবীর দশ দিকের প্রতীক।”
আরও পড়ুনঃ puri jagannath temple: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে চালু পোশাকবিধি
ইয়ং বয়েজ ক্লাবের যুব সভাপতি মিঃ বিক্রান্ত সিং বলেন,“দর্শকেরা প্যান্ডেলের ভিতরে ঝিনুকের মনোমুগদ্ধকর কাজ দেখতে পাবেন। ভেতরে প্রতিমার পাশাপাশি ঝিনুকের কাজও আছে । গত চার মাস ধরে চলছে প্যান্ডেলের প্রস্তুতি। আমাদের প্যান্ডেলের বাইরে ভারতের চন্দ্রজয় কে স্মরণীয় করে রাখতে অতিরিক্ত আকর্ষণ, চন্দ্রযান-৩ এর একটি মডেল স্থাপন করা হবে”।
তাঁর হাতে ১০টি গ্লোবের উপস্থিতি আমাদের জীবনের পথ চলতে শেখায়, যেখানে বার্তা দেয় যে বিশ্ব এক – “বসুধৈব কুটুম্বকম”। এটি একটি সংস্কৃত বাক্যাংশ যা মহা উপনিষদে পাওয়া যায়। যার অর্থ “বিশ্ব এক পরিবার”। শব্দগুচ্ছের ধারণাটি আজও প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে কারণ এটি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দেয়, ব্যক্তি বা পারিবারিক স্বার্থের চেয়ে সামগ্রীক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয় ।
এই পুজো সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও রবীন্দ্র সরণির সংযোগকারী স্থান মধ্য কলকাতার তারা চাঁদ দত্ত স্ট্রিটের কাছে অবস্থিত ।