২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Mandir)। মন্দির উদ্বোধনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে ১২ জানুয়ারি, শুক্রবার থেকেই। আজ বিশেষ অডিও বার্তা দিয়ে সেই কথা স্মরণও করিয়ে দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Prime Minister Narendra Modi)। কিন্তু হিন্দু মন্দিরের উদ্বোধনের বিরোধিতা করছেন স্বয়ং হিন্দু ধর্মগুরুরাই। অযোধ্যার রাম মন্দিরের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেছেন ভারতের ৪ জন প্রধান হিন্দু ধর্মগুরু, প্রধানত তাঁরা উত্তরাখণ্ড, গুজরাট, ওড়িশা এবং কর্ণাটক রাজ্যের প্রধান শঙ্করাচার্য। রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Mandir) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েও তাঁরা যোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এই বিরোধিতার একটি প্রধান কারণ হল, শাস্ত্রের বিধি লঙ্ঘিত হওয়া।

 

৯ জানুয়ারি, মঙ্গলবার, পুরী এবং যোশীমঠ মন্দিরের প্রধানরা ঘোষণা করেছেন যে, চার শঙ্করাচার্যের কেউই উদ্বোধনে যোগ দেবেন না। কারণ, মন্দিরটি পবিত্র করার আচার ধর্মীয় শাস্ত্র মেনে হচ্ছে না। তাঁদের মতে, মন্দিরটির নির্মাণকাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ না হওয়া মন্দিরে দেবতার প্রতিষ্ঠা করা যায় না। এটা শাস্ত্রবিরুদ্ধ।

 

জ্যোতির মঠের ৪৬ তম শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্পষ্ট বলেছেন, “শাস্ত্র মেনে পুজো হচ্ছে না, এই কথাটা বলেছি বলে আমাদের ‘মোদী বিরোধী’ বলা হচ্ছে। কিন্তু, আসলে সত্যি সত্যিই রাম মন্দিরে শাস্ত্রবিরোধী কাজ করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেছেন যে, ধর্মীয় শাস্ত্রগুলি যাতে অনুসরণ করা হয় এবং সেগুলি যাতে যথাযথভাবে পালন করা হয়,  তা নিশ্চিত করা শঙ্করাচার্যদের কর্তব্য। “মন্দিরের নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই পবিত্রতার কাজ সম্পন্ন করে ধর্মগ্রন্থকে ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। এত তাড়ার কোনও দরকার নেই। ”

 

আরেকদিকে, পুরীর মন্দিরের শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বলেছিলেন যে, তিনিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি এড়িয়ে যাবেন, কারণ তিনি “নিজের অবস্থানের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন।” তিনি বলেছেন, “আমি সেখানে কী করব? যখন (ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদীজি মূর্তিটি উদ্বোধন করছেন আর স্পর্শ করছেন, আমি কি সেখানে দাঁড়িয়ে হাততালি দেব? আমি কোনও পদ চাই না। আমার কাছে ইতিমধ্যেই সবচেয়ে বড় পদটি আছে… কিন্তু সেখানে শঙ্করাচার্যরা কী করবেন?”

রায়পুরের আরেকটি সাক্ষাৎকারে নিশ্চলানন্দ সরস্বতী প্রশ্ন তুলেছেন যে, রাম মন্দির একটি ধর্মীয় উপাসনাস্থল। সেখানে এত রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কেন? তিনি বলেন,  “ভগবান রামের মূর্তিকে পবিত্র করা পুরোহিত এবং সাধুদের দায়িত্ব। সেখানে কেন এত রাজনীতিবিদ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে? সামনে ভোট আসছে বলেই রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানটি এত জাঁকজমকপূর্ণ করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।”

 

Exit mobile version