অ্যাপোলো মাল্টিস্পেসালিটি হসপিটালস, কলকাতা, প্রথম সারির এক স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থা যার উদ্ভাবনশীলতা ও রোগী-কেন্দ্রিক পরিষেবা সুপ্রতিষ্ঠিত। কলকাতায় তাদের এই নতুনতম সুবিধা, অ্যাপোলো জেনোমিক্স ইনস্টিটিউট-এর স্থাপনা গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক, জিন প্রযুক্তিযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ব্যক্তি-বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক ওষুধ প্রয়োগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাপোলোর অঙ্গীকারেরই সাক্ষর বহন করছে।

মুম্বাই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ ও চেন্নাইয়ের পর, অ্যাপোলো জেনোমিকস ইনস্টিটিউট এবার কলকাতাতেও তার যাত্রা শুরু করল। এই অঞ্চলে বাড়তে থাকা বংশাণু বা জিন সংক্রান্ত অসুখ ও দ্রুত সেগুলিকে চিহ্নিত করা ও প্রতিরোধ করাই এই ইনস্টিটিউটের লক্ষ্য।

অ্যাপোলো জেনোমিকস ইনস্টিটিউট-এর সূচনা অনুষ্ঠানটি হায়াত রিজেন্সি কলকাতা’য় আয়েজিত হয়, যেখানে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাঁদের মতামত প্রকাশ করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন, অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রুপ-এর গ্রুপ মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ অনুপম সিবল, গ্যাস্ট্রো সায়েন্স ও মেডিসিন বিদ্যার ডিরেক্টর ডাঃ মহেশ কুমার গোয়েঙ্কা এবং শিশু, জিন সংক্রান্ত ও ক্লিনিক্যাল কাজের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ বোহিত ভোজরাজ। আরও উপস্থিত ছিলেন পূর্বাঞ্চলের সিইও মি. রাণা দাশগুপ্ত, মেডিক্যাল পরিষেবার ডিরেক্টর ডাঃ সুরেন্দ্র সিং ভাটিয়া ও পরামর্শদাতা ক্লিনিক্যাল জিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাশ্বতী মুখোপাধ্যায়।

কলকাতায় এই ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন সম্পর্কে অ্যাপোলো গ্রুপ-এর কার্যনির্বাহী ভাইস চেয়ারপারসন ডাঃ পৃথা রেড্ডি বলেন, “ভারত একটি বৈচিত্রপূর্ণ ভিন্নতা সম্পন্ন দেশ। ফলে, জিন-ভিত্তিক ওষুধ এখানে রূপান্তর ঘটাতে পারে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রকের প্রকাশিত ২০২১-এর এক রিপোর্টে বলা হয়, ভারতে বিরল ব্যাধি বলে যেগুলিকে বিশ্ব স্তরে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, তার সংখ্যা ৭,০০০ থেকে ৮,০০০ মতন। আজ আমাদের জনসাধারণ ক্রমশ স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছে। তার ফলে, অসংক্রামক রোগ ও ডায়বিটিস, ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো জিন থেকে উৎপন্ন অসুখ চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে জিন পরীক্ষার গুরুত্ব

উপলব্ধি করছেন। অসংক্রামক রোগ ভারতে ও সারা বিশ্বে গণস্বাস্থ্য পরিষেবার একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেনোমিকস ইনস্টিটিউটের সম্প্রসারণ ওই অসুখগুলিকে প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” অ্যাপোলো গ্রুপ অফ হসপিটালস-এর এমডি শ্রীমতি সুনীতা রেড্ডি বলেন: “অ্যাপোলোতে আমরা বিশ্বাস

করি যে, তাঁদের চিকিৎসার ধারা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগীদের প্রথম সারিতে নিয়ে আসা প্রয়োজন। বাস্তবসম্পন্ন তথ্যের ক্রমবর্ধমান হারে যোগান আর সেই সঙ্গে একজন রোগীর বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ, একজন রোগীর ব্যাধি কী ভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে ও চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে। অ্যাপোলো জেনোমিকস ইনস্টিটিউট-এ আমাদের ফোকাস হল প্রতিষেধক ব্যবস্থা ও ব্যক্তি-বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ, যা এক সহনশীল ও সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন সমাজ গড়ে তোলার ব্যাপারে আমাদের অঙ্গীকারকেই তুলে ধরে। বিশ্ব জনসংখ্যার ২০ শতাংশ বাস করে ভারতে। কিন্তু বিশ্বে জিন সংক্রান্ত যে তথ্য ভাণ্ডার গড়ে উঠেছে, তাতে

ভারতের অবদান মাত্র ০.২ শতাংশ। অ্যাপোলো জেনোমিকস ইনস্টিটিউট-এ পরিকল্পনা হল জিনের বিভিন্নতা নিয়ে একটি তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করা। যাতে সুরক্ষিত পদ্ধতিতে সংগৃহীত জিন সংক্রান্ত তথ্য সুরক্ষিত রাখা যায়। অ্যাপোলোর জেনোমিকস ইনস্টিটিউটগুলি (অ্যাপোলো জেনোমিকস নেটওয়ার্ক) শিক্ষা ও গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন কেস নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষজ্ঞরা একে অপরের কাছ থেকে শেখেন। এবং প্রতি মাসে একটি বড় আকারের জার্নাল ক্লাবের ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ভারতে, মৃত্যু ও কষ্টের প্রধান কারণ হল অসংক্রমক ব্যাধি। ওই সব অসুখই ভারতে ৬৫ শতাংশ মৃত্যুর কারণ। প্রতিষেধক পরিষেবাকে জাতীয় স্তরে অগ্রাধিকার দিতে অ্যাপোলো বদ্ধপরিকর। সুনির্দিষ্ট ও ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা করে ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবার রূপান্তর ঘটানোই অ্যাপোলো।

Exit mobile version