ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছিল ১৫ই অগস্ট। তবে নদিয়া ও বালুরঘাটের একাংশের স্বাধীনতা দিবস তার আড়াইদিন পর, অর্থাৎ ১৮ ই আগস্ট। এর পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক ছোট গল্প। বিপ্লবীদের আত্ম বলিদান ও বিদ্রোহের কারণে ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার। তবে ভারত ছাড়ার আগে তারা দেশ বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। স্যার র‍্যাডক্লিফ কমিশন বানিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের দায়িত্ব নেন। সেই বিভাজনের নিরিখে নদিয়ার শুধুমাত্র নবদ্বীপ ভারতবর্ষের অধীনে ছিল।

 

শিবনিবাস সহ কৃষ্ণনগর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ( বর্তমান বাংলাদেশ) মধ্যে পড়ে যায়। মুসলিম লীগ ১৪ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে। তারপর নদিয়ার অধিকাংশ মানুষের অসন্তোষে চিন্তায়  পড়ে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ সরকার তার ভুল বুঝতে পেরে ১৯৪৭ সালের ১৭ই আগস্ট  একটি সংশোধনী এনে ঘোষণা করেন। ওই সংশোধনীতে বলা হয় চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া এবং মেহেরপুর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত এবং কৃষ্ণনগর, শিবনিবাস এবং রানাঘাট ভারতবর্ষের অন্তর্ভুক্ত হবে। ওই সংশোধনের পরে ১৮ই আগস্ট কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে ভারতবর্ষের পতাকা উত্তোলন করা হয়। যদিও বর্তমানে সেটি ভারতের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন না করে  দিনটিকে ভারতভুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই জন্য ১৮ই আগস্ট দিনটি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাস মন্দির প্রাঙ্গণে এখনও পতাকা উত্তোলন করে কিছু মানুষ।

 

এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য মহিলাদের চূর্ণী নদীতে নৌকা প্রতিযোগিতা। তবে এছাড়াও করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো মহিলাদের চূর্ণী নদীতে নৌকা প্রতিযোগিতা। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহামারীর কারণে গত দু’বছর ধরে সেই অনুষ্ঠান অনেকটাই কমে গেছে । প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও ১৮ আগস্ট ভারতভুক্তি দিবস হিসেবে পতাকা তোলা হবে মন্দির চত্বরে।

আরও পড়ুন: Benefits of Moringa Leaves: বসন্তে সজনের জুড়ি মেলা ভার