কলকাতা, ১৯শে সেপ্টেম্বর: মুম্বাই নয়, খাস কলকাতার সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে বহু জন সমাগমের মধ্যে পালিত হল গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi)। শুনতে অবাক হলেও সত্যি, কলকাতার বুকে, শিবরাম চক্রবর্তীর মেস বাড়ির পাড়া মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে এই সুবিশাল সিদ্ধি বিনায়ক দেবস্থানম মন্দির, জমিদারি বাড়ির আদলে তৈরি এই বাড়িতে একদম মুম্বাইয়ের সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরের মত করেই সারা বছর গণেশ পুজো হয়।সারা দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে এসেছিলেন প্রচুর মানুষ।
তবে এই মন্দির তৈরির পিছনের ইতিহাসটিও বেশ তারিফ করার মতো। শৈশবের দু’জন প্রিয় বন্ধু, রাধেশ্যাম আগারওয়াল ও রাধেশ্যাম গোয়েনকা বড়বাজারের ২০০ বছরের পুরোনো মল্লিক কোঠি কেনেন, যেখান থেকে তাদের শিল্পের যাত্রা শুরু করে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথ তৈরি করেন। আজকের ভারতে তাদের সংস্থাকে একডাকে সকলেই চেনেন। ব্যবসায় তাদের অভাবনীয় সাফল্যের কৃতজ্ঞতার একটি স্মারক হিসাবে শ্রী গণেশজি’র চরণে সমর্পন করেছেন এই মন্দির। ২০১৫ সালে, এই ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ি কিনেছিলেন মল্লিক বাড়ি থেকে। স্থাপত্য একইরকম রেখে, তারা পুনর্গঠিত করেন। অনেক ইতিহাসবিদের মতে ব্রিটিশ আমলে কলকাতায় এই জমিদার বাড়ির একটি বিশেষ স্থান ছিল। স্রেফ স্থাপত্যের দিক থেকেও এই মন্দিরের গুরুত্ব অপরিসীম।
আরও পড়ুনঃ Durga Puja : ভিন রাজ্যে পাড়ি বাংলার ঢাকির
তবে এই মন্দির কিন্তু আর বাকি সব মন্দিরের মত নয়। বরং আজকের জেনারেশনের ভাষায় এটি একটি ৩৬০ ডিগ্রি মন্দির হিসেবে ঈশ্বর ও মানুষের সেবা করে চলেছে। বর্তমানের দেবস্থানামের বৃহৎ অংশে, বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচী চলছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা, কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্রও রয়েছে। একদিকে যেমন ট্যালি, জিএসটি কোর্স করানো হয়, আবার সাথে শেখানো হয় বিউটি থেরাপি, অ্যাপারেল ডিজাইনিং এর মত কোর্স। এছাড়া স্পোকেন ইংলিশ যত্ন সহকারে শেখানো হয় সব বয়সীদের। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এখানে প্যাথলজির অন্তর্গত সব রকম রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে রক্তে শর্করা আছে কিনা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া রয়েছে অপটিমেট্রিসট এবং পোডিয়াট্রিষ্ট রয়েছে রক্তে শর্করা নির্ভর রোগের চিকিৎসার জন্য। এই সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে বাজারদরের চেয়ে অনেক কম খরচে, বিশ্বমানের চিকিৎসায়। বর্তমানে ইইসিপি পদ্ধতি চালু হয়েছে, যা হৃদরোগের বিশেষ চিকিৎসায় কার্যকরী হিসেবে প্রচলিত হয়েছে।
প্রতিদিন এই মন্দির খোলা থেকে ভোর ৫:৪৫ থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা আর বিকেলে সাড়ে চারটে থেকে রাত ৯ টা অবধি। বুধবার সারাদিন খোলা থাকে এই মন্দির।