করোনার নতুন সাব ভ্যারিয়্যান্ট JN.1 (Covid JN.1 Variant) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ছিলেন বিশেষজ্ঞ মহল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জানা গিয়েছিল , বাংলায় নতুন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন জন। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল আট জন। এখনও অবধি রাজ্যে আট জন কোভিড আক্রান্তের (Covid patients) হদিশ পাওয়া গেছে।

 

বৃহস্পতিবার রিপোর্ট অনুযায়ী তিন জন কোভিড রোগীর (Covid Patient) সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আরেকজন পাঁচ মাসের শিশু ভর্তি ছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। নতুন করে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে এক করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। বিগত চার দিনে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবে আরও চার জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যে আট। তবে তারা করোনার নতুন সাব ভ্যারিয়্যান্ট জেনএন.১-এ আক্রান্ত কিনা তা এখনও জানা যায়নি। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে পাঠানো হয়েছে। কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে যে চারজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তারা চার জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। তারা আইসোলেশনে আছেন বাড়িতে।

 

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, ‘কোভিড যে নেই তা কোনও সময়ই বলা হয়নি। নতুন তিন জন নয়া ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হবে। তবে এই নিয়ে আলাদা করে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। আচমকাই যে তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন এমনটা নয়’। এই নতুন স্ট্রেন প্রসঙ্গে ICMR-এর প্রাক্তন গবেষক  বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বাড়লেও এই নিয়ে প্যানিক করার কোনও কারণ নেই। কোভিড আমাদের সঙ্গেই আছে। কয়েক মাস ছাড়া ছাড়া এই ভাইরাসের নয়া প্রজাতি মাথা চাড়া দিতে পারে।’

 

প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, যাঁদের শরীরে কো মর্বিডিটি রয়েছে এবং প্রবীণদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস বেশি ভয়ংকর বলে জানা যাচ্ছে। ডা. রমন গঙ্গাখেদকর বলেন, ‘যদি কোনও প্রবীণের কো মর্বিডিটি থাকে সেক্ষেত্রে তাঁদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে।’ উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে এই স্ট্রেনের হদিশ মিলেছিল। বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশে এই ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, JN.1-কে ভ্যারিয়্যান্ট অফ কনসার্ন বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।

 

তবে ভারতে JN.1 ভ্যারিয়েন্টে মোট আক্রান্তর সংখ্যা ২২ । সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রেও একজনের শরীরে থাবা বসিয়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট। রোগীকে  ভর্তি করা হয়েছে  হাসপাতালে। যে ২২ জনের শরীরে এই ভ্যারিয়ান্টের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে, তাদের সকলের শরীরেই মৃদু উপসর্গ আছে। এদের মধ্যে অনেকেই বাড়িতে চিকিৎসাধীন বলে জানা গিয়েছে। প্রত্যেকেই কোমর্বিড রোগী বলেও জানা গেছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তবেই ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে।

 

এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের হদিশ মিলেছে কেরালায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৯৬। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০০। বৈঠকে বসেছে কেরালার স্বাস্থ্য দফতর। মন্ত্রী বীণা জর্জ যদিও আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আতঙ্ক ছড়াবেন না। নভেম্বর মাস থেকেই আমরা রাজ্যে জিনোম সিকোয়েন্সিং শুরু করেছি। সে মাসেই ৭৯ বছর বয়সী এক মহিলার শরীরে এই স্ট্রেন প্রথম থাবা বসায়। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আমরা টেস্টিং বাড়িয়েছি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’