অযোধ্যা: রাম মন্দির উদ্বোধনের এখনও এক মাসও পেরোয়নি। রামলালাকে দর্শনের উন্মাদনা উদ্বোধনের প্রথম দিন থেকেই। ২৩শে জানুয়ারি থেকে সাধারণ ভক্তদের জন্য রাম মন্দিরের দরজা খুলে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন লাখ লাখ ভক্ত ভিড় জমাচ্ছেন মন্দিরে। এখনও পর্যন্ত ৩০ লাখ মানুষ রামলালার দর্শন করেছেন। প্রতিদিন মন্দিরে ভিড় জমাচ্ছেন প্রায় আড়াই লাখ ভক্ত। এটি শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের যে কোনও ধর্মীয় স্থানে ধারাবাহিক ভাবে ভক্তদের ভিড়ের রেকর্ড।

 

ভিড় কমবে না বরং আগামী দিনে বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এপ্রিল ও গ্রীষ্মের ছুটিতে রাম নবমীতে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আপনিও কি সামনেই রাম মন্দির যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন ? তবে কিন্তু অবশ্যই মাথায় রাখতে পাঁচটি  বিষয়। কী কী সেগুলো জেনে নিন।

 

আগে থেকে অযোধ্যার হোটেল বুক করে রাখুন

যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল বিমান। ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এবং স্পাইস জেট বিভিন্ন মেট্রো যেমন মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ, কলকাতা, চেন্নাই, জয়পুর, পাটনা এবং দারভাঙা থেকে অযোধ্যায় প্রতিদিন বিমান চলাচল করছে। দিল্লি-অযোধ্যা বন্দে ভারত এবং অমৃত ভারত সহ অযোধ্যার ট্রেন সংযোগও ভালো। যদি আপনি প্রথমে লখনউয়ে পৌঁছন, অযোধ্যায় হাইওয়েতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার রাস্তা পার করতে হবে মন্দিরে পৌঁছতে। তবে অযোধ্যায় যাওয়ার আগে অবশ্যই হোটেল বুক করে রাখুন। পরে হোটেল নাও পেতে পারেন। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে হোটেলের চাহিদা বহুগুণ বেড়েছে। চাইলে থাকার জন্য ধর্মশালাও বেছে নিতে পারেন বা হোমস্টে বুক করতে ‘পবিত্র অযোধ্যা’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।

 

দুই দিনের ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন

মনে রাখবেন আগামী দিনগুলোতে কিন্তু অযোধ্যার রাম মন্দিরে ভিড় আরও বাড়বে। ভাবেন যদি ফাঁকায় ফাঁকায় মন্দির দর্শন করবেন তাহলে একেবারেই ভুল। হাতে সময় রাখা তাই বাঞ্ছনীয়। কমপক্ষে দুই দিনের ভ্রমণে নতুন মন্দির দেখার জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে। এছাড়াও রাম কি পউরি, বিখ্যাত হনুমানগডীর মন্দির এগুলোর দেখার সুযোগ থাকবে।

 

সকালের দিকেই দর্শনের সময় রাখুন

রাম মন্দির সকাল সাড়ে ৬টায় খোলে। দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকে। দুপুরে দুই ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে মন্দির। আবার ২টো থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা। যত যত সকাল সকাল যাবেন ভিড় তুলনামূলক কম। মন্দির কমপ্লেক্সের ভিতরে জুতো, মোবাইল, ইলেকট্রনিক আইটেম বা ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। শুধুমাত্র ছোট মানিব্যাগ নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। মন্দিরের প্রধান ফটকে সারিতে প্রবেশের আগে দর্শনার্থীদের তীর্থযাত্রী সুবিধা কেন্দ্রে সমস্ত জিনিসপত্র জমা করতে হবে। এছাড়া ঈশ্বরকে উৎসর্গ করা কোনও প্রসাদ বা ফুল নিতে পারবেন না।

 

বেশ খানিকটা হাঁটতে হবে

মন্দিরে পৌঁছতে গেলে আপনাকে বেশ কিছুটা পথ হাঁটতে হবে। তাই আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। অনেকটা পথ যেহেতু হাঁটতে হবে সেক্ষেত্রে এক জোড়া ভালো জুতে পরলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। উত্তরপ্রদেশ সরকার ধর্মপথ এবং রাম পথে তীর্থযাত্রীদের জন্য বৈদ্যুতিক বাস চালু করেছে। সেই বাস মন্দিরে নিয়ে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের।

 

লাইনে দাঁড়াতে হবে

প্রতিদিন প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ ভক্তের সমাগম ঘটছে। সেক্ষেত্রে রামলালার দর্শনেও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। দীর্ঘ লাইন দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। রামলালার দর্শনে আপনাকে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হতে পারে। তবে রাম জন্মভূমিক পথে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে চেয়ার ও চাটাই বিছানো রয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থাও রয়েছে। তীর্থযাত্রীদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য হোল্ডিং এরিয়াও তৈরি করা হয়েছে। এত কষ্ট করে যখন আপনি যখন রামলালার সামনে পৌঁছবেন তখন তাঁকে মন প্রাণ ভরে অনেকক্ষণ ধরে দেখবেন এমন আশা করবেন না। হয়ত ৪-৫ সেকেন্ডের জন্য দর্শন পেতে পারেন।