সকাল হলেই সকলেই মেতে উঠবেন বীণাপাণির আরাধনায়। সরস্বতী পুজো মানেই তো সক্কাল সক্কাল স্নান করে অঞ্জলি দেওয়া, কুল খাওয়া এবং তার পর স্কুলে স্কুলে প্রতিমা দর্শন করা। সরস্বতী পুজোর সঙ্গে সঙ্গেই দখিনা বাতাস নিয়ে হাজির হয় বসন্ত। আর বসন্ত মানেই তো চারদিকে রঙের উজ্জ্বলতা। তাই বীণাপাণির আরাধনায় সাজ হোক হলুদ আর সাদায়, বাসন্তী রঙ পছন্দ হলে ট্রাই করতেই পারেন। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, সরস্বতী পুজোয় কীভাবে সেজে ওঠা যায়। তবে আগামীকাল ভ্যালেন্টাইনস ডে ও। সন্ধেতে সাজতে পারেন একটু অন্যভাবে। আসুন, দেখে নিই, দুটো অনুষ্ঠানের ভিন্ন লুক।

 

মেয়েদের সাজ:

সরস্বতী পুজো মানেই তো শাড়ি। এই দিনে কচি-কাঁচাদের মধ্যে শাড়ি পরার উন্মাদনাই থাকে আলাদা। আবার বলা যায়, জীবনের প্রথম শাড়ি পরার হাতেখড়ি হয়ে যায় এই দিনটি থেকেই। সত্যি বলতে কী সরস্বতী পুজোর ঠিক আগে থেকেই বিভিন্ন শাড়ির দোকানে চোখে পড়ে ছোট্ট ছোট্ট মেয়েদের জন্য লাল পাড় হলুদ শাড়ির সম্ভার। বড়রাও কিন্তু এই দিনে সাধারণত শাড়িই বেছে নেন। সরস্বতী পুজো মূলত সকালের দিকেই হয়, তাই সাজগোজও হওয়া উচিত সে-রকমই। হলুদের নানা শেডের সুতি কিংবা হ্যান্ডলুম কিংবা খাদির শাড়ি এই দিনটির জন্য আদর্শ। লাল অথবা সবুজ পাড়ের হলুদ শাড়ি তো চিরন্তনী। আবার সাদাও খুবই সুন্দর লাগে এই দিনটির জন্য। অন্য রকম সাজতে চাইলে হালকা হলুদ পাড়ের সাদা শাড়িও বেছে নেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে থাকুক কনট্রাস্ট অথবা ম্যাচিং ব্লাউজ। তবে সরস্বতী পুজোর সকালে মেক-আপ হবে হালকা । চড়া মেক-আপ কিন্তু একেবারেই যাবে না। আর চুল খোঁপা করে কিংবা খোলা রেখে জড়িয়ে নেওয়া যায় উজ্জ্বল ফুলের মালা।

 

মেকাপ

সকালবেলায় ছিমছাম মেকাপই উপযুক্ত। ভাল করে ফেসের বেস মেকাপ করে চোখে হালকা কাজল, হালকা লিপস্টিক পরতে পারেন। অনেকে ন্যুড শেডের লিপস্টিকও বেছে নেন। শাড়ির সঙ্গে একটা টিপ পরলে কিন্তু মন্দ লাগবে না।

 

ছেলেদের সাজ:

সরস্বতী পুজোয় ছেলেদের সাজেও থাকুক হলুদ আর সাদার ছোঁয়া। হলুদ সুতির কিংবা খাদির পাঞ্জাবি এই দিনের জন্য আদর্শ। বেছে নেওয়া যেতে পারে চিকনকারি হালকা সেলফ কাজের সাদা কিংবা হলুদ রঙের পাঞ্জাবিও। যারা ধুতি পরতে পছন্দ করেন তারা হলুদ অথবা সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে বেছে নিতে পারেন সরু লাল পাড়ের সাদা ধুতি। আবার চুড়ি পাজামা কিংবা জিনসের সঙ্গেও টিম-আপ করা যেতে পারেন পাঞ্জাবি। পুরোপুরি সাবেকি লুক না চাইলে ,  বেছে নিতে পারেন হলুদ অথবা সাদা রঙের কুর্তা কিংবা এথনিক ব্লক প্রিন্টের শার্টও। পরিবারের খুদে সদস্যটির সাজও হবে হলুদ কিংবা সাদায়। ছোট্ট হলুদ পাঞ্জাবির সঙ্গে পরিয়ে দেওয়া যেতে পারে সাদা ধুতি কিংবা পাজামা।

 

ভ্যালেন্টাইনস ডে মেকাপ

প্রেমের উৎসবে গা ভাসাতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি প্রায় তুঙ্গে। ভালবাসার উৎসবকে আরও একটু রঙিন করে তুলতে প্রয়োজন বাহারি সাজপোশাকের। কেবল ভাল পোশাক পরলেই তো আর হল না, পোশাকের পাশাপাশি আপনার মেকআপ আর হেয়ারস্টাইলও হতে হবে নজরকাড়া ৷

 

১) প্রথমে ক্লিনজ়ার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এতে মেকআপ ভাল করে বসবে। মেকআপ করার আগে একটু বরফও ঘষে নিতে পারেন মুখে।

২) খুব বেশি চড়া সাজের প্রয়োজেন নেই। সবার আগে প্রাইমার ব্যবহার করুন। মেকআপ দীর্ঘ ক্ষণ টিকিয়ে রাখতে প্রাইমার লাগানো খুব জরুরি। তার পর হালকা করে ফাউন্ডেশন লাগান। বিশেষ করে চোখের নীচের অংশে ভাল করে ফাউন্ডেশন মাখুন।

 

৩) ত্বকে কোনও জায়গায় দাগছোপ থাকলে সেই জায়গায় কন্সিলার ব্যবহার করুন। এ বার কমপ্যাক্ট পাউডার নিয়ে নাকের উপর, গাল, কপাল ও চোখের নীচে লাগান। তবে  মুখ যেন অতিরিক্ত সাদা না হয়ে যায়। হালকা গোলাপি বা পিচ রঙের ব্লাশ ব্যবহার করতে পারেন। সব শেষে ব্যবহার করুন হাইলাইটার।

৪) চোখের উপরে ও নীচে হালকা করে কাজল লাগান। ব্রাউন শেডের আইশ্যাডো ব্যবহার করে ব্রাশের সাহায্যে চোখের উপরের কাজলটি ঘেঁটে দিন। একটা স্মেকি লুক তৈরি করার পর প্রয়োজনে একটু গ্লিটারিং আইশ্যাডোও লাগাতে পারেন। মাস্কারা লাগাতে ভুলবেন না যেন।

৫) ঠোঁটের মেকআপটা সুন্দর করে করুন। প্রথমে লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁটের বাইরে এঁকে নিন। চড়া রঙের লিপস্টিক লাগান। দীপিকার পছন্দের লাল রঙের লিপস্টিকেও সাজতে পারেন। রাতের সাজে গাঢ় লিপস্টিকটা বেশ মানাবে।