উৎসব মানেই সাজগোজ। শুধু ভাল পোশাকেই বাজিমাত করা যায় না, তার জন্য চাই মানানসই মেকাপও। মেয়েদের ক্ষেত্রে মেকাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিপস্টিক প্রসাধনীর অন্যতম। পোশাকের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে লিপস্টিক পরলেই হবে না। লিপস্টিকের শেড বাছুন মুখের গড়ন অনুযায়ী আর তাতেই হবে কিস্তিমাত। লিপস্টিকের নিত্য নতুন শেড ট্রাই করতে কে না ভালবাসে? কিন্তু আপনার জন্য সঠিক কোনটা? চলুন জেনে নিই।

 

স্কিনটোন অনুযায়ী লিপস্টিক বাছাইয়ের কারণ

লিপস্টিক কেনার সময় শুধুমাত্র পছন্দের রঙ দেখে কিনে ফেলার অভ্যাস অনেকেরই আছে কিংবা বান্ধবী বা কলিগদের পরনের কোনও লিপ কালার পছন্দ হলেই তা আপনার ড্রেসিং টেবিলে? তাহলে কিন্তু সাজটাই মাটি। যেমন অরেঞ্জ রঙ ফেয়ার টু মিডিয়াম স্কিন টোনের জন্য। ডীপ বেরি কালার একটু চাপা গায়ের রঙে দারুণ মানিয়ে যায় কিন্তু ফর্সা ত্বকে মানাবে না। আপনার   শ্যামলা ত্বকে যেই শেডটা ন্যাচারাল ন্যুড দেখায়, ফর্সা ত্বকে তা ব্রাউন রঙের মনে হয়। একই লিপস্টিক অথচ ত্বকের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম দেখায়।

 

১) লাল রঙের শেড

লাল লিপস্টিক ক্যারি করতে চান না এমন মেয়ে কম। ট্র্যাডিশনাল লুকে অথবা ইভিনিং পার্টিতে লাল লিপস্টিক মানিয়ে যায়। লাল এমনই একটা রং যা ফর্সা বর্ণের মেয়েরা যেমন পরতে পারেন, তেমনি শ্যামলারাও পড়তে পারেন নির্দ্বিধায়। লালের মধ্যেও কিন্তু শেড আছে। কয়েকটি শেড সকালেও ভাল লাগে। কেমন ধরণের লাল রঙ আমার টোনের সাথে পারফেক্ট হবে, এ নিয়ে অনেক গবেষণাও করে ফেলি আমরা। ব্রাইট রেড, অরেঞ্জ রেড, সিঁদুর লাল, নিওন অরেঞ্জ এগুলো কুল আন্ডারটোনে দারুণ মানাবে। ফর্সা ত্বকের অধিকারিনী হলে চোখ বুজে এই শেডগুলো বেছে নিতে পারেন। মিডিয়াম টোনের সাথে টমেটো রেড, চাপা বা শ্যামলা রঙের সাথে গাঢ় লাল বা ব্লাড রেড, মেরুন  রঙের লিপস্টিক খুব ভাল মানায়। স্কিনটোন অনুযায়ী লিপস্টিক বাছাই করে নিলে দেখতে খুবই ভালো মানাবে।

 

২) গোলাপি শেড

পিঙ্ক কালারের প্রতি মেয়েদের আকর্ষণ আছে। ফর্সা ত্বকের আন্ডারটোন সাধারণত গোলাপি ঘেঁষা হয়, ফলে গোলাপির নানা শেড তারা অনায়াসে পরতে পারেন। বেবি পিঙ্ক, লাইট পিঙ্ক, কটনক্যান্ডি পিঙ্ক এগুলো ফর্সা ত্বকে সবচেয়ে ভালো মানায়। হট পিঙ্ক ও ফুশিয়া রঙ উজ্জ্বল শ্যামলাদের জন্য গুড। মিডিয়াম বা ট্যানড স্কিনে রোজি বা ডাস্টি পিঙ্ক, কোরাল, পীচ, ম্যাজেন্টা খুব ভাল লাগে।  শ্যাম বর্ণের  হলেও গোলাপি অনায়াসে পরতে পারেন। সেক্ষেত্রে ডীপ শেডের কালার বেছে নিন, যেমন- ওয়াইন, ডার্ক ম্যাজেন্টা, পাম  কিংবা ক্যানবেরি। এভাবেই স্কিনটোন অনুযায়ী লিপস্টিক বাছাই করুন।

 

৩) ব্রাউনের সম্ভার

গরজাস মেকওভারের সাথে ব্রাউন কালার অনেকেই পছন্দ করে। রাতর পার্টিতে খুবই ইন এই কালার। ন্যুড ব্রাউন, লাইট ব্রাউন এগুলো ফেয়ার স্কিনের সাথে খুব ভালো যায়। আর মভ, কফি ব্রাউন, ওয়ার্ম ব্রাউন এই শেডগুলো ওয়ার্ম আন্ডারটোনের জন্য বেস্ট। যারা মনে করেন শ্যামবর্ণ হলে বোধহয় বাদামি লিপস্টিকে মানাবে না, তারা চকলেট ব্রাউন, ডীপ মভ এগুলো ট্রাই করেই দেখুন পার্টিতে আপনি হিট।

 

৪) ন্যুড কালার

ন্যুডকালার ইয়ং জেনারেশনের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, আর পারফেক্ট শেডের ন্যুড লিপস্টিক সাজকে দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলে। রেগ্যুলার ইউজের জন্যও এই রংটা অনেকেই পছন্দ করেন। হেবি আইলুকের সাথে রোজি-পিঙ্ক ন্যুড, ন্যাচারাল ন্যুড, বেইজ এগুলো খুব ভালো চয়েস। মিডিয়াম টোনের স্কিনের জন্য ন্যুড ব্রাউন, কোরাল ন্যুড, কেরামেল ন্যুড এগুলো ব্যবহারযোগ্য শেড। আর ফর্সা হলে লাইট, ট্যান, পীচ-ন্যুডের এই শেডগুলো খুব সহজেই ক্যারি করতে পারেন।

 

লিপস্টিক কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

১) হাতে লিপস্টিক সোয়াচ করে লিপস্টিক কিনে ফেলেন? আপনার হাতে যেই কালারটা সুন্দর লাগছে, সেই রঙটা ঠোঁটে দিলে বেমানান লাগতেও পারে। কারণ হাতে আর মুখে ত্বকের রঙের পার্থক্য থাকে। ঠোঁটে লাগিয়ে দেখে নিবেন রংটা মানাবে কি না। প্রায় সব বড় কসমেটিকস শপে বা শপিং মলে টেস্টার পাবেন। ঠোঁটে লাগানোর পূর্বে টিস্যু পেপার দিয়ে লিপস্টিকটা অবশ্যই মুছে নিবেন।

 

২) ঠোঁটের মরা চামড়ার কারণে লিপস্টিক ঠিকমত বসে না, তাই লিপ স্ক্রাব করে নিতে ভুলবেন না। আর ত্বকে যেমন বেইজ মেকআপ করে নেন, ঠিক সেভাবে লিপস্টিক দেয়ার আগে ঠোঁটেও লিপ প্রাইমার দিয়ে নিবেন, এতে লিপস্টিকের রঙ ভাল ভাবে ফুটবে। অবশ্যই লিপজেল বা লিপবাম দিয়ে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজড করবেন।

 

৩) যাদের স্কিন তৈলাক্ত তারা যদি গ্লসি টাইপের লিপস্টিক ব্যবহার করেন তবে পুরো মুখেই একটা অয়েলি ভাব এসে যায়, তাই ম্যাট বা সেমি ম্যাট লিপস্টিক আপনার জন্য বেস্ট অপশন হবে। টিস্যু পেপার দিয়ে হালকা প্রেস করে নিতে পারেন। আর শুষ্ক ত্বকে ডিউয়ি বা গ্লোয়ি ভাব আনতে স্যাটিন, ক্রিমি ফর্মুলার অথবা গ্লসি লিপস্টিক সিলেক্ট করুন।

 

আরও পড়ুন:  BAFTA 2024: সাতটি পুরস্কার পেল ওপেনহাইমার, দেখে নিন বাফটায় কে কে জয় পেলেন