কলকাতা: বই প্রেমীদের কাছে প্রাণের উৎসব আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা (International Kolkata Book Fair)। প্রত্যেক বছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকে অগণিত পাঠক। শুধু পাঠক নয়, লেখকরাও উদগ্রীব হয়ে থাকে বই মেলার জন্য। প্রতি বছর বই মেলার মাধ্যমেই অনেক নতুন নতুন লেখক এই মেলার মাধ্যমে পাঠকের দরবারে হাজির হন। শহর কলকাতা, এমনকী পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছেন কলকাতা বইমেলা প্রাঙ্গণে। মানুষের যাতে যাতয়াতে অসুবিধা না হয় তার জন্য স্পেশ্যাল বাস ও মেট্রো পরিষেবারও ঘোষণা করা হয়। যার ফলে মেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুবিধাও হয়েছে মানুষের। কেবল বই কেনা নয়, খাওয়া দাওয়ারও ভরপুর আয়োজন থাকে কিন্তু এত কিছুর পরেও বই কতটা কিনলেন মানুষ? তা কি প্রকাশকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারল?

 

সাহিত্য প্রেমীদের অনেকেরই দাবি, এই বছর বইয়ের দোকানের তুলনায় মানুষের আকর্ষণ ফুড স্টলের প্রতি কিছুটা বেশিই। বইয়ের কাউন্টারের পরিবর্তে ফুড স্টলে অতিরিক্ত সময় কাটাতে বা খাবার নিয়ে সেলফি ও গ্রুফিতে ক্লিক করতেই ব্যস্ত থাকছেন একটা বড় অংশের মানুষ। অর্থাৎ একাংশের মানুষের মধ্যে বই মেলায় গিয়ে বই কেনার তাগিদে কিছুটা হলেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলেই অভিযোগ বইপ্রেমীদের একাংশের।

 

যদিও এই কথা অবশ্য মানতে রাজি নন দে’জ পাবলিশিংয়ের অন্যতম কর্তা তথা গিল্ডের সম্পাদক । তাঁকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলে বলেন, ‘ছেলে মেয়ে আত্মীয়স্বজন নিয়ে অনেকেই বই মেলায় আসছেন। তাঁরা বই কিনছেন, তারপর খাওয়াদাওযার জায়গায় যাচ্ছেন। খাওয়া বাদ দিয়ে তো আর বইমেলা নয়।’ এবার কি খাওয়াদাওয়ার প্রতি মানুষের ঝোঁক বেশি? গিল্ডের সম্পাদকের জবাব, ‘তেমন তো দেখলাম না। খাবারের স্টল আর ক’টা? বইমেলার প্রতি মানুষের আকর্ষণ আছে। অনেককে দেখলাম, বই পছন্দের পর কাউন্টারে গিয়ে হয়ত তাতে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। এটা মাসের শেষ বলে হতে পারে। কারণ এবার তো বইমেলা একদম মাসের শেষে হল। মাসের প্রথম দিকে হলে আরও বিক্রি হত।’ বিক্রি হয়েছে ২৮ কোটি টাকারও বেশি। শীতের সন্ধ্যায় কফি কাপে চুমুক দিয়ে ফিস ফ্রাই বা রোলে কামড় দিতে দিতে সাহিত্য প্রেমী মানুষদের সঙ্গে যে এবারের বইমেলা জমজমাট তা বলার অপেক্ষা রাখে না।